Monday, 23 November 2015

চতুর্থ পর্ব : কাঁথার বিভিন্ন ধরন ও ব্যবহার (তৃতীয় খন্ড)

     রুমাল কাঁথা : এই ধরনের কাঁথা চৌকো মাপের হয় অর্থাৎ এটি লম্বা ও চওড়ায় এক ফুট মাপের হয়। ছোট চারকোনা টুকরো কাপড় দিয়ে তৈরী হয় এই কাঁথা। এটি রুমাল হিসাবে ব্যবহার হলেও ডিশ ঢাকার জন্যও ব্যবহার করা হয়।  এই ধরনের কাঁথায় প্রজাপতি, পদ্ম, কলকা, ফুল, লতা-পাতা, পাখি ইত্যাদি মটিফ লক্ষ করা যায়।
রুমাল কাঁথা 

    গিলাফ : কোরান শরীফের ঢাকনা হিসাবে ব্যবহার করা হয়। চৌকো নকশি কাঁথাকে বরফির মত রেখে তিন দিক একত্রিত করে সেলাই করা হয় এবং এক দিক খোলা রাখা হয়।
গিলাফ 

জায়নামাজ 
  জায়নামাজ : এইটি প্রার্থনা করার জন্য অর্থাৎ নামাজ পড়বার সময় ব্যবহার করা হয়। আকারে এইটি লম্বা ধরনের হয়। এতে ফুল, লতা-পাতা, গম্বুজ ও মিনারের মটিফ দেখা যায়।

     পান প্যাচানী : পান পেচিয়ে রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়। এইটির ব্যবহার নকশি থলি বা বগলির মতই।

আসন কাঁথা
     আসন কাঁথা : পুজোর কাজে এই ধরনের কাঁথা ব্যবহার করা হয়। এছাড়া এটি বর-কনে বা অতিথিদের বসার জন্যও ব্যবহার করা হয়। এই কাঁথার আকার চৌকো বা আয়েতকার উভয়ই হতে পারে। আবার কিছু আসন কাঁথা দেখাযায় যেগুলি একটু লম্বাটে ও বড় আকারের হয়।  পালকিতে বসার জন্যও এটি পেতে দেওয়া হয়। আবার কোনো সাধক বা পীর প্রার্থনা করার সময় এই কাঁথার ব্যবহার করেন। এতে রাধা-কৃষ্ণ, লক্ষ্মী, রথ ইত্যাদি মটিফ লক্ষ করা যায়। এই ধরনের কাঁথার ব্যবহৃত মটিফগুলি ধর্ম ও লোকজ বিশ্বাসবিষয়ক।

কবর বা মাজার কাঁথা 
      কবর বা মাজার কাঁথা : এই কাঁথা কবর বা মাজারের ঢাকনা হিসাবে ব্যবহার করা হয়। একে আবার চাদর কাঁথাও বলা হয়। এই ধরনের কাঁথায়  নানা ধরনের নকশা চিত্রিত হয়। 

      বইতন বা বস্তানী কাঁথা : বই খাতা জড়িয়ে রাখার জন্য এই ধরনের কাঁথা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি চার হাত মাপের চতুষ্কোণ ধরনের হয়। এই ধরনের কাঁথায় মানুষ পদ্ম, কলকা, ফুল, লতা-পাতা, পাখি ইত্যাদি বিভিন্ন মটিফ লক্ষ করা যায়।

      নকশি চাদর : গায়ে দেওয়ার জন্য শাল বা চাদর হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এতে নানা ধরনের নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়।  বিশেষত কলকা মটিফ এতে লক্ষ করা যায়। তবে দু-পাশের বর্ডার পাড়ের ডিজাইন এবং কোন কলকা বা মধ্যিখানে বুটির মত  ফুল বা লতা-পাতার ডিজাইন লক্ষ করা যায়। 


নকশি চাদর 
      এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের কাঁথা লক্ষ করা যায়। যেমন - পাইড় কাঁথা, লাহরী কাঁথা, লীফ কাঁথা, গোলাপ বা ঢাকনি কাঁথা, পর্দা কাঁথা, সারিন্দা বা আবরণী কাঁথা প্রভৃতি। 




তথ্যসুত্র : 
৩. Nakshi Kantha Images.
৪. লোকশ্রুতি ( তথ্য সংস্কৃতি দপ্তর )
৫. লোকজ শিল্প (বরুণকুমার চক্রবর্তী )



No comments:

Post a Comment